অর্থ অনর্থের মূল: তাৎপর্য

অর্থ অনর্থের মূল: তাৎপর্য অর্থ অনর্থের মূল: তাৎপর্য অর্থ অনর্থের মূল: তাৎপর্য অর্থ অনর্থের মূল: তাৎপর্য অর্থ অনর্থের মূল: তাৎপর্য অর্থ অনর্থের মূল: তা
Please wait 0 seconds...
Scroll Down and click on Go to Link for destination
Congrats! Link is Generated

 

অর্থ অনর্থের মূল: তাৎপর্য


আমার জানা মতে শতকরা ৯৯(নিরানব্বই) বন্ধুকে ভালো ও খুশি রাখতে আপনার কাছে প্রচুর অর্থ থাকলেই চলবে আর যখনই আপনি অর্থের যোগান দিতে পারবেন না তখন আপনার কাছে কোনো বন্ধুকে খুঁজে পাবেন না এটাই সত্য এবং বাস্তব।


ছোটবেলায় পাঠ্যবইয়ে একটা ভাবসম্প্রসারণ ছিল—‘অর্থই অনর্থের মূল’। দুঃখজনক হলেও সত্য আমরা কেউই সেই আপ্তবাক্যটি অন্তরে ধারণ করতে পারিনি! হয়তো মুখস্থ করে পরীক্ষায় পাস করে এসেছি, কিন্তু আমাদের বাস্তব জীবনে তার প্রতিফলন ঘটেনি একদমই। আমরা ওই অর্থের পেছনেই ছুটে বেড়াই

প্রতিদিন প্রতি মূহুর্ত।



এ পৃথিবীতে মানুষের জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত সর্বক্ষেত্রে অর্থের প্রয়ােজন। এমনই গুরুত্বপূর্ণ যে, অর্থ সঠিকভাবে সদ্ব্যবহার না করলে তা অনেক সময় অনর্থের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।



অর্থ মানবজীবনের জন্যে খুবই প্রয়ােজনীয়। কারণ মানবজীবনে প্রতি ক্ষেত্রের কার্যকারিতা অর্থের ওপর নির্ভরশীল । অর্থই আজীবন মানুষের সকল চাওয়া-পাওয়ার প্রয়ােজন মেটায়। অর্থ না থাকলে জীবনে দুঃখকষ্টের শেষ থাকে না। অর্থ না থাকলে অনেক সময় জীবনকে মূল্যহীন বা অর্থহীন বলে মনে হয়। এজন্যেই মানুষ অর্থের পেছনে ছুটে চলেছে নিরন্তর। কী করে অঢেল অর্থ উপার্জন করা যায় সেই চেষ্টার শেষ নেই। কিন্তু অনেক কষ্ট ও সাধনার এ অর্থই অনেক সময় অনর্থের মূল হয়ে দাঁড়ায়। কারণ বেশি অর্থ মানুষকে অন্যায়ের পথে, অপরাধের পথে ঠেলে দেয়। বেশি অর্থ অনেক সময় মানুষকে অমানুষ করে তােলে। অর্থকে কেন্দ্র করে পৃথিবীজুড়ে ঘটে চলেছে নানাবিধ ভয়ংকর, জঘন্য, অমানবিক ও অকল্যাণকর ঘটনা। অর্থের মােহ বড়ই ভয়ানক। অর্থের কারণে পিতা-পুত্র, ভাই-ভাই, রাজায়-রাজায়, দেশে-দেশে ঘটে চলেছে অনেক অপ্রীতিকর ঘটনা। মুক্তিপণ দাবি করে অর্থ আদায় করে, না দিলে প্রাণটা কেড়ে নেওয়া হয়। আর যাদের অর্থ আছে তারা অর্থের বিনিময়ে প্রিয়জনকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চালায়। অর্থের লোভ এমনই ভয়ানক যে মানুষ বিবেক, মনুষ্যত্ব, নীতি বিসর্জন দিতে দ্বিধা করে না। আর সমাজের ভয়ানক ব্যাধি যৌতুক, যার বলি হচ্ছে অসংখ্য কন্যাসন্তান।


আমাদের সমাজে একটি বহুল প্রচলিত প্রবাদ আছে, ‘টাকা পয়সা হাতের ময়লা’। কিন্তু আমরা আমাদের সমাজ, দেশ সবকিছুকেই সেই ময়লা দিয়েই ঘিরে রাখি। আমরা সেই ময়লামোহ থেকে মুক্তি পাইনি এখনো, সেই ময়লার কারণেই আমাদের সমাজ এখনো এত নোংরা। কারণ, আমরা ভুলে গেছি প্রবাদ কিংবা ওই ভাবসম্প্রসারণের মর্মার্থ কী ছিল।


যাঁরা ছোটবেলার সেই প্রবাদ অন্তরে ধারণ করেছেন। সেসব ব্যক্তি আমাদের সমাজে বিরল হলেও একেবারে নগণ্য নয়। এটা অবশ্য আমাদের জন্য একটি অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক ঘটনা। এর একটি অনন্য উদাহরণ হলো ২০১৫ সালে দেশের বাইরে অর্থপাচারের ঘটনা। তাঁরা বুঝতে পেরেছেন আমাদের দেশে বর্তমানে যত অনর্থ, তার পেছনে অর্থই কাজ করছে। তাই তাঁরা সাহসে বুক বেঁধে প্রচণ্ড অধ্যবসায়ের মাধ্যমে দিনের পর দিন কাজ করে গেছেন কী করে এই ‘অনর্থ’ দেশ থেকে কমানো যায়। তাঁরা দিনের পর দিন দেশ থেকে অর্থ দেশের বাইরে পাচার করে গেছেন। এবং তাঁদের প্রচেষ্টা ধীরে ধীরে সাফল্যের মুখ দেখছে। ২০১৩ সালে অর্থ পাচারকারী দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ৫১তম। ২০১৪ সালে সেই অবস্থানে বিশাল উন্নতি—২৬তম! তাঁদের এই সাফল্য অত্যন্ত প্রশংসনীয়।


একথা অস্বীকার করা যায় না যে, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় অন্যায়-অনাচার ও দুর্নীতি ইত্যাদির পেছনে অনেক সময় অর্থই প্রধান ভূমিকা পালন করে। তবে অর্থ সকল সময়ই অনর্থের কারণ হয় না। এর ব্যবহার সম্পর্কে সচেতন থাকলে অর্থ অনেক সময় মর্যাদা বৃদ্ধি করে। ব্যবহারকারী, ব্যবহার ও কার্যকারিতার ওপরই এর ভালাে-মন্দ ভূমিকা নির্ভর করে।

অর্থের লোভে পরে কখনও আপনকে পর করে দেওয়া কখনও উচিত নয়। ভালো থাকুন, অর্থের বিনিময়ে নয়, শুধুমাত্র ভালোবাসার ও ভালো সম্পর্কটা ধরে রাখতে।


লেখক সাংবাদিক মোঃ ফিরোজ খান

ঢাকা বাংলাদেশ

Post a Comment

Cookie Consent
We serve cookies on this site to analyze traffic, remember your preferences, and optimize your experience.
Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.
Site is Blocked
Sorry! This site is not available in your country.